Comments

6/recent/ticker-posts

গ্লোবাল ওয়ার্মিং আগে পৃথিবী কি উত্তপ্ত বা শীতল ছিল? || Was Earth Heating Up Or Cooling Before Global Warming?

গ্লোবাল ওয়ার্মিং পূর্বের হিসাবে পৃথিবী গরম হচ্ছিল কি না তা সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে। যে উপায়ে আপনি বিশ্বের উষ্ণতা কমাতে পারেন।


সেটি কিছুটা স্বাভাবিক চক্রের মধ্যে পরিচয় করা যেতে পারে। যেমন, শেষ আইস যুগে পৃথিবী অনেকটা ঠান্ডা ছিল, আর এর আগে গরম ছিল। এরপর মানুষ এসে ফসিল জীবজন্তুদের দহন, কাঠামো নাশ এবং কৃষি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাণীজাতির বিস্তার এবং পরিবেশে পরিবর্তনের কারণে পৃথিবী বেশি গরম হচ্ছে। এর গতি দ্রুতগতিতে বাড়ছে, যা পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য এবং মানব সমাজের প্রভাব বাড়ানোর কারণে।

গত শতাব্দীর মধ্যে, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা সম্পূর্ণরূপে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়েছে। প্রমাণগুলি প্রতিবাদ্ধ্য নয়। এগুলি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় থার্মোমিটার এবং অন্যান্য সেন্সর থেকে এসেছে।কিন্তু এই তাপমাত্রা একটি নতুন ঘটনা না। আগের হাজার বছরে যখন তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র না ছিল এবং মানুষ, ফসিল ও জীবজন্তুদের কারণে কার্বন ডাইঅক্সাইড ছাড়া পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকত।

বিশ্বজগত বর্তমান গরম হওয়ার আগে পৃথিবী মিলিয়ন বছর ধরে গরম হওয়া এবং ঠান্ডা হওয়ার নিজস্ব স্বাভাবিক চক্র দিয়ে গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শেষ আইস এজ এর সময় (প্রায় ১০,০০০ বছর আগে) পৃথিবী আজকের চেয়ে অনেক ঠান্ডা ছিল এবং উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের অনেক বৃহত বরফে ঢাকা ছিল।

তবে, শতাব্দী ধরে প্রায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াস (১.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে এবং এর মূল কারণ মানুষের কার্যকলাপ যেমন ফসিল জীবজন্তুদের দহন, কাঠামো নাশ এবং কৃষি প্রকল্প সহ বিভিন্ন মানব কারণে হচ্ছে। এই গরম হওয়ার প্রক্রিয়াটি প্রায় ১০,০০০ বছর ধরে ঘটে আসা কোনো স্বাভাবিক চক্রের চেয়েও তা বেশ অভ্যন্তরীণ এবং দ্রুতগতিতে চলছে যা পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

যে উপায়ে আপনি বিশ্বের উষ্ণতা কমাতে পারেন

 গণপরিবহন ব্যবহার করুন:

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের পরিবর্তে হাঁটা, সাইক্লিং বা গণপরিবহনের ব্যবহার কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনার পাশাপাশি আপনাকে ফিট রাখতে সাহায্য করবে।

আইপিসিসি এর উপ চেয়ারম্যান ড. ডেব্রা রবার্টস বলেছেন, "আমরা শহরে চলাচলের বিকল্প উপায় বেছে নিতে পারি। যদি গণপরিবহনে চলাচলের ক্ষেত্রে আমাদের প্রবেশাধিকার না থাকে। তবে নিশ্চিত করুন যে আপনি এমন রাজনীতিবিদদের নির্বাচন করছেন যারা গণপরিবহনের বিকল্প ব্যবস্থাগুলো সরবরাহ করবে।"

এছাড়া দূরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে উড়োজাহাজের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক বাহন ব্যবহার করুন বা ট্রেন যাত্রাকে বেছে নিন।

এছাড়া ব্যবসায়ী সফর বাতিল করে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহার করতে পারেন।


শক্তির অপচয় রোধ করুন

ওয়াশিং মেশিনে যদি কাপড় ধুতেই হয় তাহলে সেটি শুকানোর কাজ মেশিনের টাম্বেল ড্রায়ারে না করে, বাইরের রোদে বা বাতাসের মধ্যে দড়িতে মেলে দিন। এতে কাপড় শুকানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। এছাড়া বিদ্যুতের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো এড়ানো যাবে।

ঘরকে ঠাণ্ডা করতে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা তার এর চাইতে বাড়িয়ে রাখুন। এবং ঘর গরম করতে হিটারের তাপমাত্রা কমিয়ে ব্যবহার করুন।

পরের বার যখন আপনি কোন বৈদ্যুতিক সামগ্রী কিনবেন, তখন এটি নেবেন যে যন্ত্রটি শক্তি সঞ্চয়ে দক্ষ কিনা। (টিপস: যন্ত্রের গায়ে শক্তি সঞ্চয়ের তারকা চিহ্নযুক্ত লেবেল, ইকো ফ্রেন্ডলি অর্থাৎ পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি অথবা ইনভার্টার যুক্ত আছে কিনা দেখে নিন)।

নিজের প্রয়োজনীয় কিছু কাজের জন্য আপনি পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহার করতে পারেন। যেমন: পানি গরম করতে সৌরশক্তিতে চালিতে সোলার ওয়াটার হিটার ব্যবহার করতে পারেন।

শীতকালে বাড়ির স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ছাদে ঠাণ্ডা প্রতিরোধক স্তর স্থাপন করুন। গরমকালেও ছাদ ঠাণ্ডা রাখার ব্যবস্থা নিন।

যেসব বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে না সেগুলো আনপ্লাগ করে সুইচ বন্ধ করে রাখুন।


মাংস খাওয়া কমিয়ে নিরামিষভোজী হয়ে যান:

মুরগি মাংস, ফল, শাকসবজি বা শস্যের উৎপাদনের চেয়ে লাল মাংসের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন ঘটায়।

প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে ১১৯টি দেশ কৃষিখাতে কার্বন নির্গমন কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিল।

তবে তারা কিভাবে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে এ বিষয়ে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

কিন্তু তারপরও আপনি চাইলে এই কার্বন নির্গমন কমাতে সাহায্য করতে পারেন।

আর সেটা সম্ভব হবে যদি আপনি তিনটি বিষয় মেনে চলেন।

খাদ্যাভ্যাসে মাংসের পরিবর্তে সবজি এবং ফলের ওপর নির্ভরতা বাড়ান। যদি এটি খুব চ্যালেঞ্জিং মনে হয়, তাহলে সপ্তাহের অন্তত একদিন মাংস না খেয়ে কাটান।

দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া কমিয়েও আপনি পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারেন। কেননা এসব খাদ্যের উৎপাদন ও পরিবহণে প্রচুর পরিমাণে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়।

আমদানি করা খাবারের পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মৌসুমি খাদ্য বেছে নিন। এবং খাবারের অপচয় এড়িয়ে চলুন।


প্রতিটি জিনিস পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা করুন-এমনকি পানিও:


আমাদের বারবার পুনর্ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে বলা হয়।

কিন্তু কোন বস্তুকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করতে যে উপকরণ লাগে সেটার পরিবহন এবং প্রক্রিয়াকরণে প্রচুর পরিমাণে কার্বনের ব্যবহার হয়।

তারপরও এটি নতুন পণ্য তৈরির চেয়ে কম শক্তি ব্যবহার করে। কিন্তু পণ্যগুলো পুনঃব্যবহারের ফলে আরও নানা ক্ষয়ক্ষতি কমানো যেতে পারে।

পানির ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য।অরোমার রেভির মতে, " আমাদের পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে বৃষ্টির পানি সংগ্রহের কাজে জড়িত থাকার চেষ্টা করতে হবে।"

Post a Comment

0 Comments