Comments

6/recent/ticker-posts

ফেসবুক তৈরির মূল ধারণা কার ছিল

ফেসবুক তৈরির ধারণা কাদের কাছ থেকে এসেছিল? মার্ক জাকারবার্গ না অন্য কেউ?












সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এর কথা বললেই আমরা প্রথমেই যে ব্যাক্তির কথা মাথায় আসে তিনি হচ্ছেন  মার্ক জাকারবার্গ,কিন্তু ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ অন্য অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ হলেও তিনি  খুব ভালো প্রোগ্রামার বা কোডার নন। ফেসবুক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন-প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) অ্যাডাম ডি’অ্যাঞ্জেলো। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন শিক্ষার্থী ক্যামেরন, টাইলর উইঙ্কভাস ও দিব্য নরেন্দ্রের কাছ থেকে ফেসবুক তৈরির ধারণা চুরি করেছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। এই তিনজন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হার্ভার্ড কানেকশন’ নামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরির চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রোগ্রামার উচ্চ বেতনে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেওয়ায় তাঁরা জাকারবার্গের সহায়তা চান। এরপরই হার্ভার্ড কানেকশন তৈরির সঙ্গে যুক্ত হন জাকারবার্গ। তবে তিনি কাজটি শেষ করেননি। এর বদলে জাকারবার্গ হার্ভার্ড কানেকশনের কোডের ওপর ভিত্তি করে ‘দ্য ফেসবুক’ নামের আরেকটি প্রকল্প তৈরি করেন।এই কারনে জাকারবার্গ বিরুদ্ধে মামলাও করেন ক্যামেরন, টাইলর উইঙ্কভাস ও দিব্যা নরেন্দ্র।তাঁদের অভিযোগ যে অমূলক ছিল না, তা প্রমাণ হয় ২০০৮ সালে। কারণ, তিনজনের প্রত্যেককেই ফেসবুকের ১২ লাখ ডলার করে শেয়ার দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করেছিলেন জাকারবার্গ।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেই জনপ্রিয়তা লাভ করে ফেসবুক ধীরে ধীরে বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করে।ফেসবুক চালুর পরপরই হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরপর স্ট্যানফোর্ড, ইয়েল, কলাম্বিয়াসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা।
শুরুতে ফেসবুক তৈরি হয়েছিল লিনাক্স, অ্যাপাচি, মাইএসকিউএল এবং পিএইচপি প্রোগ্রাম দিয়ে। প্রতিটির আদ্যক্ষর দিয়ে এদের সংক্ষেপে এলএএমপি বা ল্যাম্প বলা হয়। এদের মধ্যে লিন্যাক্স হলো অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপাচি হলো সার্ভার, মাইএসকিউএল হলো তথ্যভান্ডার এবং পিএইচপি হলো সার্ভার-সাইড স্ক্রিপ্টিং ভাষা। কিন্তু ফেসবুকের জনপ্রিয়তা ও কাজের পরিধি বাড়ার পর ফেসবুক হিপহপ কম্পাইলার (এইচএইচভিম) ব্যবহার করে, যা পিএইচপিকে সি প্লাসপ্লাসে রূপান্তর করে। চ্যাট–সেবার জন্য ফেসবুক প্রাথমিকভাবে ইয়ারলং প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করত। প্রোগ্রামিং ভাষাটি হোয়াটসঅ্যাপসহ অধিকাংশ চ্যাটিং–অ্যাপে ব্যবহার করা হয়। তবে ফেসবুক তখন থেকেই চ্যাটিংয়ের জন্যও সি++ (প্লাসপ্লাস) ব্যবহার শুরু করে। আর বিপুল পরিমাণ ছবি ও ভিডিও সংরক্ষণ এবং সরবরাহের জন্য হেস্ট্যাক ও স্ক্রাইব ব্যবহার করে। সার্চ ইনডেক্সের জন্য ব্যবহার করা হয় ক্যাসান্ড্রা। এটি মূলত তথ্যভান্ডারের একটি প্রক্রিয়া। ব্যবহারকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের জন্য হ্যাডুপ ও হাইভের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফেসবুক। কাঠামো, প্রোগ্রামিং ভাষাসহ সব প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে ফেসবুক ব্যবহার করে থ্রিফট ব্যবহার করে। ফেসবুক বার্তার জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের তৈরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে।
ফেসবুকের আনুমানিক ৬০ হাজারের বেশি সার্ভার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের প্রাইনভিলায় সম্পূর্ণ নিজস্ব নকশার যন্ত্রপাতি দিয়ে তৈরি তথ্যভান্ডার রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ফেসবুকের হ্যাডপ এবং হাইপ ক্লাস্টার আট কোর, ৩২ জিবি র‍্যাম এবং ১২ টেরাবাইটের হার্ডডিস্কযুক্ত ৩ হাজার সার্ভারের সমন্বয়ে তৈরি। 
ফেসবুকের মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সকল ব্যক্তি একসাথে যুক্ত হতে পারেন।

ফেসবুক ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো নিম্নলিখিতঃ

2004: ফেসবুক প্রথম বার লঞ্চ হয়। প্রথমে এটি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য তৈরি করা হয়।
2006: ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সামাজিক নেটওয়ার্কিং পেশাগত উন্নয়ন এবং কাজ খুজে পেতে সহায়ক হওয়ার জন্য একটি মার্কেটপ্লেস লঞ্চ করে।
2007: ফেসবুক পেজ লঞ্চ হয়, যা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য স্বতন্ত্র পেজ সৃষ্টি করার জন্য একটি সুযোগ সরবরাহ করে।


Post a Comment

0 Comments